th
টেক্সটাইল ইন্জিনিয়ারিং বিষয়টা নিয়ে অনেকের মনে অনেক ভ্রান্ত ধারণা আছে।টেক্সটাইলের স্টুডেন্টরা চাকরি নিয়ে টেনশন করে না,করে চাকরিতে পরিশ্রম নিয়ে।তাদের উদ্দেশ্যে আমার একটাই কথা ভাই,জীবনে উন্নতিও করতে চান আবার পরিশ্রমও করবেন না তাই কি হয়?সেই ছোটবেলা থেকে পড়ে আসছি পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি।কথাটা কি এখনো বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না?আসুন কথাটা বিশ্বাসযোগ্য করে দেই।আমাদের বুটেক্সে 440 টা সিটের জন্য এডমিশন টেষ্ট দিয়েছে প্রায় ২৫ হাজার স্টুডেন্ট।প্রতিটা সিটের জন্য ৬১ জন স্টুডেন্ট।আপনি আজকে চান্স পেয়েছেন আরো ৬০ জন আপনার মতো মেধাবীকে পিছনে ফেলে।আপনি কি মনে করেন পরিশ্রম ব্যতীত এই কঠিন কাজকে আপনি সম্ভব করে তুলেছেন?কখনোই না!আপনি পরিশ্রম করেছেন বলেই আজকে এ পর্যায়ে আসতে পেরেছেন।পরিশ্রমের ফল সুমিষ্ট হয়।আপনি অলরেডি পরিশ্রমের ফল পেয়ে গেছেন।এর স্বাদ কেমন আপনি তা জেনে গেছেন।তাই পরিশ্রম করতে আপনার ভয় কি!
এবার আসুন বিষয়ভিত্তিক পরিশ্রমের কথা বলি।বুটেক্সের ১ নম্বর সাবজেক্ট হলো ওয়েট প্রসেসিং।আমরা শুনে থাকি ডাইং এ ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কাজ করতে হয়।অবশ্যই আপনাকে এই তাপমাত্রায় কাজ করতে হবে।কারণ আপনার কাজের ক্ষেত্রটিতে ঐ তাপমাত্রা না থাকলে আপনার কাজ ভালো হবে না।তাই বলে আপনি যদি ভাবেন আপনি সারাজীবন এই তাপমাত্রায় কাজ করবেন তাহলে আপনি ভুল ভাবছেন।কারণ আপনি প্রথমে রঙ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় বলে দেবেন এবং শ্রমিকেরা আপনার কথামত কাজ করবে।আপনার সর্বোচ্চ আধঘন্টা ঐ তাপমাত্রায় থাকতে হতে পারে।দুই তিন বছর পর আপনি যখন সিনিয়র সুপারভাইজার হবেন তখন শুধু এসি রুমে বসে থাকবেন আর টাকা গুনবেন।আপনার ঐদিকে যাওয়ার প্রয়োজনই হবে না।তবে হ্যা প্রথমদিকে আপনাকে একটু পরিশ্রম করতেই হবে।
এপারেল আর টেক্সটাইল ম্যানেজমেন্ট এর স্টুডেন্ট দের একটু কম পরিশ্রম করতে হয়।তবে এদের মানসিক পরিশ্রম অন্যান্যদের থেকে বেশি। যেহেতু তারা ম্যানেজমেন্ট সেক্টরে আছে তাই তারা এসির হাওয়া একটু বেশিই খায়।তবে এদের সমস্যা হলো এদের বেতন বাড়ে কম,কিন্তু 

এরা প্রথমদিকেই বেশ ভালো ইনকাম করতে পারে।আর আপনি যদি একটু বুদ্ধি করে চলতে পারেন তবে সহজেই গাড়ি বাড়ির মালিক হতে পারবেন।
ইয়ার্ন এবং ফেব্রিকের স্টুডেন্টদের কাজ পুরোপুরি ইন্জিনিয়ারিং।পিউর ইন্জিনিয়ার এদেরকেই বলা হয়।এদের কাজের সাথে মেকানিক্যাল ইন্জিনিয়ারদের কাজের কিছুটা মিল আছে।আগে এই বিষয়ের একজন ইন্জিনিয়ারকে অনেক পরিশ্রম করতে হলেও বর্তমানে স্বয়ংক্রিয় অনেক মেশিন আবিষ্কার হওয়ায় এদের পরিশ্রম অনেক কমে গেছে।তবে ডাইং এর স্টুডেন্টদের মতো প্রথমদিকে এদেরও কিছুটা পরিশ্রম করতে হয়।তিন চার বছর পর অফিসে বসেই সব কা
জ কমপ্লিট করতে পারে।মাঝে মাঝে একটু কারখানায় বা মিলে যেতে হয় তাদের।
এবার আসি ফ্যাশন ডিজাইনিং এর কথায়।বুটেক্সের সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ সাবজেক্ট এটিই।একটু ক্রিয়েটিভিটি থাকলে সহজেই আপনি বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করতে পারবেন।আর ক্রিয়েটিভ কাজে পরিশ্রম একটু বেশি কিন্তু সেই কাজে আনন্দ থাকে বলে তা কখনো পরিশ্রম বলেই মনে হয় না।আমার মনে হয় নিজেদের কাজটাকে সবচেয়ে বেশি উপভোগ করে ফ্যাশন ডিজাইনাররাই।আর বিশ্বজোড়া খ্যাতি পাওয়ার হাতছানি তো তাদেরই বেশি।তবে এ কাজে উন্নতি করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ক্রিয়েটিভ হতে হবে।