অনেকের ছোট বেলার লালিত স্বপ্ন যখন ভেঙ্গে যায় , তখন বিশ্ববিদ্যালয় লেভেল এ পড়ার জন্য বর্তমান বিশ্বে চাহিদা সম্পন্ন বিষয় কে বেছে নেয় ভালো ক্যারিয়ার এর তাগিদে ।আবার যুগের সাথে তাল মিলিয়ে অনেকের স্বপ্নই থাকে কেবল ভালো চাহিদা সম্পন্ন সাবজেক্ট এ পড়া । টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং হল তেমন একটি সাবজেক্ট ।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে, এরকম অনেক বন্ধুকে টিটকারি করে গার্মেন্টস বলে ট্যাগ দিয়ে দেয়া হয় বন্ধু মহলে । কেননা তাদের ধারনা টেক্সটাইল এ পড়া মানে সকালে টিফিন বাটি হাতে গার্মেন্টসের দিকে দৌড় মারা । এ সব কারনে অনেকে আশাহত হয় এই ভেবে যে, শেষ পর্যন্ত গার্মেন্টস……।। কিন্তু তারা ভেবে দেখে না এই গার্মেন্টস শিল্পই টিকিয়ে রেখেছে বাংলাদেশকে । বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে ব্যান্ড করে তুলছে ।
“made in Bangladesh” এটা টেক্সটাইল শিল্পের ফসল ।
টেক্সটাইলে এ কাজ করা ছাড়াও গবেষণার বাজারে এবং উচ্চতর শিক্ষায় টেক্সটাইল সাবজেক্টের রয়েছে এর অমিত সম্ভাবনা ।
দেশের সরকারি এবং বেসরকারি কিছু টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি মাস্টার্স করা সুযোগ রয়েছে পিএইচডি গবেষণা করার সুযোগ নেই বললেই চলে ।তবে BUTEX সম্প্রতি তা চালু করে। পিএইচডি গবেষণা করার জন্য আপনি যেতে পারেন বিদেশে ।আর আপনি সেখনে……
• টেক্সটাইলের কটন-বেজড ম্যানুফেকচারিং বা প্রসেসিং নিয়ে মাস্টার্স বা পিএইচডি গবেষণা করতে পারেন
• আশ-পাশের বিষয় । যেমন, পলিমার সায়েন্স/ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স, টেকনিক্যাল এপ্লিকেশন অফ টেক্সটাইলস, কম্পোজিট ম্যাটেরিয়াল ইত্যাদি নিয়ে উচ্চতর শিক্ষা নিতে পারেন ।
• কেমিস্টি বিশেষ করে পলিমার কেমিস্ট্রি; ন্যাচারাল বা সিন্থেটিক পলিমারিক ম্যাটেরিয়াল সম্পর্কে পড়াশুনা করা যেতে পারে।
• ফাইবার, ফেব্রিক বা অন্য ম্যাটেরিয়ালের বিভিন্ন ধরনের মেকানিকাল, কেমিক্যাল, থার্মাল ইত্যাদি প্রপার্টিজ এনালাইসিস করার জন্যে যেসব টেস্টিং আছে সেগুলোর ব্যাবহার এবং ব্যাখ্যা করার পদ্ধতি জানা থাকলে যেকোন ম্যাটেরিয়াল নিয়ে গবেষণা করতে পারবেন
• বিভিন্ন ম্যাটেরিয়ালের ফাংশনাল প্রপার্টি বা ইউনিকনেস এবং তাদের এপ্লিকেশন নিয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে আজকাল ।
• বিভিন্ন ধরনের কেমিকাল প্রসেসিং ও পরিবেশ দূষন এবং এর প্রভাব (অর্থনৈতিক, সামাজিক বা পরিবেশ) মোকাবেলা সংক্রান্ত পরিবেশ বিজ্ঞান; কিংবা বৈরী পরিবেশের জন্যে উপযুক্ত পোশাক, বিভিন্ন ধরনের ইকোটেকনোলজি (প্লাজমা, মাইক্রোওয়েভ, আল্ট্রাসাউন্ড) এবং পরিবেশ-বান্ধব ম্যাটেরিয়াল নিয়েও গবেষণা হচ্ছে বিস্তর।
• ডিজাইন নিয়ে গবেষণার ব্যাবহার বেড়েছে অনেক।
• গবেষণার সবচেয়ে বড় বিষয় হল টেকনিক্যাল টেক্সটাইল এর ব্যাবহার । বিশ্বে যেখানে টেকনিক্যাল টেক্সটাইল এর প্রবৃদ্ধির হার ৪ % সেখানে আপ্যারেলস এর ১% । আর একারনেই টেকনিক্যাল টেক্সটাইল কে অনেক দ্রুত অগ্রসমান একটি সেক্টর ভাবা হয় টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে । শতকরা ২১ ভাগ টেকনিক্যাল টেক্সটাইলস, সমগ্র টেক্সটাইল এর মধ্যে ।
আর এই টেকনিক্যাল টেক্সটাইল এর রয়েছে নানা দিক নানা ক্ষেত্র । যেকোনো একটি তে আপনি গবেষণা চালাতে পারেন দিব্যি ।এইগুলো হল -
i. Protech ( protective textiles )
ii. Agrotech (Agro-textiles )
iii. Mobitech ( automotive and aerospace textiles )
iv. Clothtech ( clothing textiles )
v. Geotech ( geo-textiles )
vi. Hometech ( domestic textiles )
vii. Indutech ( industrial textiles )
viii. Transportation textiles
ix. Ecotech (environmentally friendly textiles)
x. Packteck ( packaging textiles )
xi. Sporttech ( sport textiles )
এ ছাড়া টেকনিক্যাল টেক্সটাইল এর আরও কিছু দিক আছে ।
তাই যাদের স্বপ্ন নিজেকে গবেষণায় নিয়োজিত করা, তাদের জন্য টেক্সটাইল গবেষণার জগতে রয়েছে সম্ভাবনার হাতছানি । একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে শুধু দেশেই নয় বিদেশে ও আপনার জন্য অনেক কর্মক্ষেত্র খোলা রয়েছে ।